ডাটা কি?
তথ্য বা উপাত্ত কি? এর প্রকারভেদ।
উপাত্তের উপস্থাপনের গুরুত্ব।
উপাত্তের সুবিধা ও অসুবিধা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হল।
উপাত্ত বা তথ্য কাকে বলে? এর প্রকারভেদ লিখ।
উপাত্ত বা তথ্য (Data) : কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে সংগৃহীত সংখ্যায় প্রকাশিত রাশিমালাকে তথ্য বা উপাত্ত বলা হয়। তথ্য বা উপাত্তের তিনটি বৈশিষ্ট্য হলো সংখ্যাবাচক মান দ্বারা প্রকাশিত হবে; পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্যের সাথে সম্পর্কিত হতে হবে।
যে কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তথ্য বা উপাত্ত সংগ্রহ করা হলো গবেষণার প্রথম পদক্ষেপ। তথ্যের উৎসের উপর
নির্ভর করে তথ্যকে দু'টি ভাগে ভাগ করা যায়।
যথা-
(ক) প্রাথমিক তথ্য ও (
খ) মাধ্যমিক তথ্য ।
উপরে উল্লিখিত তথ্যসমূহকে নিম্নে আলোচনা করা হলো-
(ক) প্রাথমিক তথ্য :
যে সকল তথ্য মৌলিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে বা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে মূল উৎস থেকে সংগ্রহ
করে রেকর্ড করা হয় তাকে প্রাথমিক তথ্য বলে। আবার তথ্য সংগ্রহ করার পর যদি তাতে কোনোরূপ গাণিতিক প্রয়োগ না করে সরাসরি উপস্থাপন করা হয় তাকেও প্রাথমিক তথ্য বলে।
(খ) মাধ্যমিক তথ্য :
যে সকল তথ্য পরোক্ষ উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয় অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংগ্রহ করা হয়, বা কোনো প্রাথমিক তথ্য থেকে পুনরায় তথ্য সংগ্রহ করা হয় তাকে মাধ্যমিক তথ্য বলা হয় ।
অবার পরিসংখ্যানিক তথ্য বা উপাত্তকে প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১। অভ্যন্তরীণ উপাত্ত এবং
২। বাহ্যিক উপাত্ত ।
১। অভ্যন্তরীণ উপাত্ত :
প্রতিষ্ঠানের ভিতর থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করা হয় তাকে অভ্যন্তরীণ তথ্য বলে। যেমন : প্রতিষ্ঠানের ক্রয়, বিক্রয়, উৎপাদন, বেতন, মজুরি ইত্যাদি সংক্রান্ত তথ্য ।
২। বাহ্যিক উপাত্ত :
প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা, নীতি নির্ধারণ বা ব্যবহারের জন্য বাহ্যিক পরিবেশ থেকে যে উপাত্ত সংগ্ৰহ করা হয় তাকে বাহ্যিক উপাত্ত বলা হয়। যেমন : কাঁচামালের উৎস, শস্যের ফলন, বাজারের অবস্থান ইত্যাদি সম্পর্কিত উপাত্ত এর সাথে সংশ্লিষ্ট।
উপাত্ত কি? উপাত্ত উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।
উপাত্ত উপস্থাপনের গুরুত্ব উল্লেখ কর।
তথ্য বা উপাত্ত (Data) : কোন বিষয় সম্পর্কে জানার বা অনুসন্ধান কার্যে বা যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য যেসব খবরাখবর সংগ্রহ করা হয় সেগুলোকে সাধারণভাবে তথ্য বা উপাত্ত বলে। অন্যভাবে বলা যায়, কোন গবেষণার সফলতার উদ্দেশ্যে সংগৃহীত সংখ্যায় প্রকাশিত রাশিমালাকে পরিসংখ্যানের ভাষায় তথ্য বা উপাত্ত বলে। যেমন ঃ কোন একটি ফসলের দশটি উদ্ভিদের উচ্চতা ২৫, ৩০, ৩৮, ৩৩, ৩৫, ৪০, ২৮, ৩৪, ৩৬, ৪২ সে.মি.। এগুলো হলো উপাত্ত ।
উপাত্ত উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ-
১. সাধারণত উপাত্ত এলোমেলো থাকে। তাই এলোমেলো উপাত্তকে সাজানোর জন্যই উপস্থাপন করা হয় ।
২. উপাত্তকে ছোট থেকে বড়, সহজ থেকে জটিল, ধারাবাহিকভাবে সাজানোর জন্য উপস্থাপন করা হয়।
৩. পাঠক বা ব্যবহারকারীদের অল্প সময়ের মধ্যে ধারণা পাওয়ার জন্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
8. উপাত্তকে সহজভাবে বুঝানোর জন্য উপস্থাপন করা হয়।
৫. উপাত্তকে সহজেই বিশ্লেষণ বা ব্যাখ্যা করার জন্য উপস্থাপন করা হয়।
৬. উপাত্তকে আকর্ষণীয়, সুন্দর ও অর্থবহ করার জন্যই উপস্থাপন করা হয়।
৭. উপাত্তসমূহের মধ্যে মিল, অমিল বা তুলনা করার জন্য উপস্থাপন করা হয়।
৮. উপাত্তের অন্তর্নিহিত জ্ঞান লালন, পালন ও গবেষণার জন্যই উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
উপাত্ত উপস্থাপনের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো লিখ।
উপাত্ত উপস্থাপনের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো (advantages and disadvantages of presentation of data) :
উপাত্ত উপস্থাপনের সুবিধা (advantages of presentation of data) :
১.তথ্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায় ।
২.অনেক উপাত্ত সংগ্রহ করে তালিকার মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা যায়।
৩. উপাত্তের বৈশিষ্ট্য সহজে প্রকাশ্য হয়ে যায়।
৪. উপাত্তের বিশ্লেষণ ও দু'টি তথ্যের মধ্যে তুলনা করতে সহজ হয় ।
৫। অনুসন্ধানকারী বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভে সহায়তা পেয়ে থাকে ।
৬। উপাত্তের অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ থাকে।
৭. উপাত্তের চলকসমূহের সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্য প্রবণতা ফুটিয়ে তোলে ও বিভ্রান্তি দূর করে।
৮. উপাত্তকে পরবর্তী পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণের উপযোগী করে তোলে।
৯. তথ্যসমূহের মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়।
১০। এতে অনেক কম সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।
১১। এর মাধ্যমে কোন কাজ করলে তাতে তুলনামূলকভাবে কম শ্রম ব্যয় হয়ে থাকে।
১২। এর থেকে প্রাপ্ত ফলাফল প্রায় সঠিক হয়ে থাকে।
উপাত্ত উপস্থাপনের অসুবিধাগুলো (disadvantages of presentation of data) :
১। তথ্য সংগ্রহ খুব নিখুঁত ভাবে করতে হবে। তা না হলে ফলাফল ভুল আসতে পারে।
২। তথ্য উপস্থাপনের জন্য বিভিন্ন তথ্য বিভিন্ন পরিসংখ্যানবিদদের নিকট থেকে নিতে হয়, যা অনেক কষ্টসাধ্য বিষয় ।
৩। উপাত্তের মান সঠিক হতে হলে উপাত্ত সংগ্রহের প্রয়োগ পদ্ধতিও যথোপযুক্ত হতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হবে না।
৪। পরিসংখ্যানের উপাত্ত সংগ্রহের সময় অতি যত্নবান ও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
৫। অনুসন্ধান ক্ষেত্র বা মাঠ থেকে সংগৃহীত সম্পর্কহীন ও উদ্দেশ্যহীন যে কোন তথ্য উপাত্ত হতে পারে না। উপাত্ত হতে হলে কোন নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সমগ্রক হতে যে তথ্য সংগৃহীত হবে তা যেন প্রতিনিধিত্বকারী হয়।
উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরণের উদ্দেশ্যসমূহ উল্লেখ কর।
উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরণের উদ্দেশ্য সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
(১) প্রাথমিক পদক্ষেপ :
১. উপাত্ত তালিকাবদ্ধকরণের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় ।
(২) সঠিক ধারণা লাভ : এটি অনুসন্ধানকারীকে সংগৃহীত উপাত্ত সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা লাভে সহায়তা করে।
(৩) তথ্যসমূহের অর্থবহতা শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলো বাদ দেয়া যায়।
(৪) সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য শ্রেণিবদ্ধকরণে তথ্যের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যমূলক বৈশিষ্ট্য প্রস্ফুটিত হয়।
(৫) পরবর্তী প্রক্রিয়ার উপযোগী : শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে তথ্যসমূহকে পরবর্তী প্রক্রিয়ার ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা যায়।
৬) তথ্যসমূহের তুলনা : শ্রেণিবদ্ধকরণের ফলে সংগৃহীত তথ্যসমূহ তুলনা উপযোগী হয়। ফলে অনুসন্ধানকারী সঠিক মন্তব্য করতে সক্ষম হয়।
৭) সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ : এটি অনুসন্ধানকারীকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সাহায্য করে।
ধন্যবাদ
Post a Comment