Ads

সাবজেক্ট রিভিউঃ ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ - Department of Geography & Environment
Geography & Environment
Geography & Environment


পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের নামকরা ইউনিভার্সিটিতে ভূগোল পড়ানো হয় । সারা পৃথিবীতে যতো ছেলে মেয়ে ভূগোলে পড়াশুনা করে তার অর্ধেকেরই কর্ম ও গবেষণার চাহিদা রয়েছে আমেরিকায় । উন্নত দেশ আমেরিকা, মহাকাশ ও পৃথিবী নিয়ে গবেষণা করে নিত্য নতুন বিষয় ও ঘটনাবলীর আবিষ্কার করছে । আমেরিকাতে একজন ভূগোলবিদের বেতন আকাশ ছোঁয়া । মহাকাশ বিজ্ঞান, জীব বৈচিত্র্য , পরিবেশ, সামরিক ক্ষেত্র এ সকল দিক থেকে অ্যামেরিকা পৃথিবীতে সবার উপরে রাজত্ব করে এর মুলে তাঁদের ভূগোল শিক্ষা ও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের ভূগোলবিদদের ডেকে নেওয়াই এর মূল কারন । মহাসাগর গুলোতে আমিরিকার রণতরী ডুবোজাহাজ ভেসে বেড়ায়, মহাকাশে আমেরিকার স্যাটেলাইট প্রদক্ষিন করে তাঁদের ভূগোল শিক্ষার উৎকর্ষতার কারনেই ।সামরিক কলা কৌশলেও অ্যামেরিকানরা ভূগোলের জ্ঞান ব্যবহার করে । তাই সারা পৃথিবী বিশেষত আমেরিকায় ভূগোলবিদের চাহিদা ব্যাপক । আর সারা পৃথিবীর সেরা সেরা ইউনিভার্সিটিতে ভূগোলে পড়াশুনা করার অফুরান সুযোগ রয়েছে । রয়েছে পৃথিবীকে প্রাণ ভরে জানার । এতক্ষণ আমরা খুব সাধারণ ভাবে জানলামঃ ভূগোল ও উন্নতদেশ প্রেক্ষিত ;সারা পৃথিবীতে ভূগোলের চাহিদা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে। 


বাংলাদেশে ভূগোল বিষয়ের ইতিহাস


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ।। এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পূর্বে বাংলাদেশের সকল স্নাতক কলেজ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলো, যেমনঃ রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ, বরিশালের বি এম কলেজ, রাজশাহী কলেজ, জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা কলেজ ইত্যাদি । ঐ সময় এই কলেজ গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতো ভারতের "কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়" সে সময়ে । সে সময়ে এই অঞ্চলের ভূগোল শিক্ষার শেকড় ছিলো কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ।। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও ভূগোল পড়ানো হতো , আবার পুরনো কলেজ, যে গুলো বর্তমান বাংলাদেশে অবস্থিত ছিলো সেগুলোর অনেকগুলোতে ভূগোল সাবজেক্ট টি ছিলো । এর মধ্যে ঢাকা কলেজ,রাজশাহী কলেজ,নাম উল্লেখ করা যায় । পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে এগুলো পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৯ সালে । সেটি ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম বাংলাদেশে ভূগোলের পাঠদান । এরপর ১৯৫৫ সালে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় । পরবর্তীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭০ সালে স্থাপিত হবার সময়ই প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগ হিসেবে ঐ বছরই জাহাঙ্গীরনগরে ভূগোলের যাত্রা শুরু হয় । বলা বাহুল্য তৎকালীন জগন্নাত্থ কলেজ বর্তমানে "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে" রুপ নেয়ায় সেখানেও ভূগোলের অবস্থান রয়ে যায় , কেননা কলেজ থাকাকালীনই সেখানে ভূগোল ছিলো । বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় "চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে" ভূগোল বিভাগ অনেক পরে ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরেও ভূগোল চালু হয় । সিলেটের শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল বিভাগ স্থাপন করে । সর্বশেষ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল চালু করে । দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে একমাত্র Central Women's University, Dhaka তে ভূগোল রয়েছে ।। ভূগোলকে কেন্দ্র করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ পৃথক একটি অনুষদ গড়ে তুলেছে । যা হলোঃ"Faculty of Earth & Environmental Sciences"; যেখানে ভূগোল বিভাগ ছাড়াও ভূগোলের আরও ৩ টি অঙ্গ বিভাগ রয়েছে । এগুলো হলোঃ সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ; ভূতত্ত্ব বিভাগ ; দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ । 





 ভূগোল সায়েন্স নাকি আর্টস বা মানবিক এর সাবজেক্ট? 


 বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে একটা ভুল ধারণা আছে । সেটা হলো ভূগোল আর্টসের সাবজেক্ট ! এটা কিন্তু একটা গুজব । আসলে ভূগোল একটা প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বা Natural Science. ভূগোলে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন , জীব বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, গণিত সকল বিষয়ই পড়ানো হয় । আর যারা ভূগোল বিষয়ে অনার্স করবে তারা বিএসসি Bachelor of Science(Honours) সার্টিফিকেটধারী হবেন। এটা নিয়ে নতুনদের মধ্যে এক ধরনের কনফিউশন তৈরি হতে দেখা যায়। বাস্তবে ভূগোল এতটাই ডিম্যান্ডেড সাবজেক্ট যে এখানে না আসলে কেউ বুঝবে না। আমাদের বাংলাদেশে ভূগোল বিষয়টি আর্টসের সাবজেক্ট হিসেবে গুজব ছড়ানোর একটা কারন আছে, সেটি হলো স্কুল বা মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এই ভূগোল সাবজেক্ট টি সাইন্স তো বটেই এমনকি আর্টস আবার কমার্স এর ছাত্র - ছাত্রীরাও নিতে পারে । আবার কমার্সে "বাণিজ্যিক ভূগোল" পড়ানো হয় । আর অর্থনীতিতে স্নাতক পড়তে গেলেও "অর্থনীতিক ভূগোল" পড়তে হয় । মূলত এই কারনে সবার মধ্যে এখনও একটা ভুল ধারণা প্রচলিত, যে ভূগোল আর্টস ! ভূগোল কিন্তু আর্টস না পিউর সাইন্স । ভূগোল একটি বিজ্ঞান যা মূলত প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এটা সামাজিক বিজ্ঞান ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এর মধ্যে সেতু স্বরূপ । মানুষ,পরিবেশ,পৃথিবী এবং এর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক , কাঠামো , ক্রিয়া ইত্যাদি আলোচনা করাই এর কাজ । তাই কমার্সে "বাণিজ্যিক ভূগোল" পড়ানো হয়, অর্থনীতিতে "অর্থনৈতিক ভূগোল" পড়ানো হয় কেননা ভূগোল সামাজিক বিজ্ঞান ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এর মধ্যে সেতু স্বরূপ।




ভূগোল বিষয়ে অনার্সে যে বিষয়গুলো পড়ানো হয়ঃ


৪র্থ বর্ষে পড়ানো বিষয় 

Environmental Management

Natural Resource Studies

Disaster Preparedness and Emergency Management

Agricultural Geography

Flood and Floodplain Management

Geospatial Analysis

একজন ভূগোল গ্র্যাজুয়েট এর ক্যারিয়ার বা চাকরিক্ষেত্রঃ


ভূগোল বিষয়ে গ্রাজুয়েশন শেষ করে একজন গ্রাজুয়েট নিম্নলিখিত সেক্টর গুলোতে তার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন। 

১] পানি উন্নয়ন বোর্ড
২] বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর
৩] বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর
৪] পরিবেশ অধিদপ্তর
৫] নদী গবেষণা ইন্সটিটিউট, ফরিদপুর
৬] বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন সংস্থা
৭] Institute of Water Modelling (IWM)
৮] CEGIS- সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস
৯] খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
১০] খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো
১১] গণপূর্ত অধিদপ্তর
১২] ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)
১৩] চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
১৪] জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ
১৫] জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
১৬] জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি (এনএপিডি)
১৭] রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
১৮] রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
১৯] দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর
২০] নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর
২১] পরিকল্পনা কমিশন
২২] পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) বগুড়া
২৩] পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)
২৪] পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন
২৫] পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)
২৬] বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড)
২৭] বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
২৮] বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান
২৯] বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর
৩০] বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট
৩১] বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ কর্পোরেশন
৩২] বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো
৩৩] বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন
৩৪] বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড)
৩৫] বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড
৩৬] বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইন্সটিটিউট
৩৭] বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ
৩৮] বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ
৩৯] বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ
৪০] বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড
৪১] ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর
৪২] ভূমি সংস্কার বোর্ড
৪৩] মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট
৪৪] যৌথ নদী কমিশন, বাংলাদেশ
৪৫] সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর
৪৬] সমাজসেবা অধিদফতর
৪৭] বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড
৪৮] বাংলাদেশ নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি। 

এছাড়া বেসরকারী সেক্টরে যে জব সমুহ রয়েছে সেগুলো নিম্নরুপ - 



1] Water Aid Bangladesh
2] UNDP Bangladesh
3] UNICEF
4] Save the Children
5] CARE
6] Concern Worldwide
7] IUCN
৮] পবা
৯] বাপা
10] BRAC
11] RDRS এরকম অনেক বিদেশী-দেশী এনজিও ও উন্নয়ন সংস্থা. 





যে কোন সাধারণ ক্যাডারে ভূগোল গ্র্যাজুয়েটরা আবেদন করতে পারবে যেমনঃ বিসিএস পুলিশ, বিসিএস প্রশাসন ইত্যাদি।। এছাড়া বিসিএস টেকনিক্যাল ক্যাডারে ভূগোল গ্র্যাজুয়েটদের জন্যই রয়েছে "বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার (ভূগোল)" তাহলে বিসিএসেও ভূগোল গ্র্যাজুয়েটদের সুযোগ অবারিত ।।
আরও একটি মজার ব্যাপার হলো বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে ভূগোলের উপরেই ১০ নম্বরের একটি সাবজেক্ট আছে ।। যার নামঃ "ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা"......।।
এছাড়াও প্রিলিমানারি পরীক্ষার "বাংলাদেশ বিষয়াদি - ৩০ নম্বর" ও "আন্তর্জাতিক বিষয়াদি - ২০ নম্বর" ও অনেক সহজ হয়ে যায় ।। অর্থাৎ বিসিএস প্রিলি পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে ৬০ নম্বর ভূগোল গ্র্যাজুয়েটদের এমনিতেই কমন থাকে ।।
এরপর আসা যাক বিসিএস লিখিত পরীক্ষায়,
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় মোট নম্বর থাকে ৯০০ নম্বর এর মধ্যে "বাংলাদেশ বিষয়াদি - ২০০ নম্বর" এবং "আন্তর্জাতিক বিষয়াদি - ১০০ নম্বর" মোট ৩০০ নম্বর বেশীরভাগ সময় কমনই থাকে ।। এছাড়া সাধারণ বিজ্ঞানে ১০০ নম্বরে ৩ টি পার্ট রয়েছে এই পার্টগুলো হলোঃ
ক) সাধারণ বিজ্ঞান - ৬০ নম্বর খ) কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি - ২৫ নম্বর গ) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স - ১৫ অর্থাৎ ক+খ+গ= ১০০ নম্বর ।।
এখানে "ক- সাধারণ বিজ্ঞান ৬০ নম্বরে"... মোট ১১ টি অধ্যায় আছে ।।
তাঁতে পদার্থ বিজ্ঞানের ৩ টি, যথাঃ Light, Sound, Magnetism !
রসায়নের ২ টি, যথাঃ Acid -Base- Salt এবং Polymer !!
ভূগোলের ৩ টি যথাঃ Water, Our Resources এবং Atmosphere !!!
আর জীব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ৩ টি যথাঃ Food & Nutrition , Biotechnology এবং Disease & Health Care !!!



গবেষণা ও স্কোলারশিপঃ


অ্যামেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্র বিভিন্ন স্কলারশিপ দেয় ।। এরকম ৩ টি স্কলারশিপ হলোঃ ১] Erasmus Mounds ২] ইংল্যান্ডের Commonwealth Scholarship ও ৩] জার্মানির DAAD....
এইগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্টুডেন্টদের জন্য দেয়া হলেও ভূগোল গ্র্যাজুয়েটদের জন্য এইগুলোতে সুযোগ অনেক অনেক বেশী ।।
কারন ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও ভূগোল সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বেশী ।।
অতএব দেশ এবং বিদেশ কোথাওই ভূগোলের গুরুত্ব কম নয় ।। বিদেশে আরও উচ্চ শিক্ষা নিয়ে একজন ভূগোলবিদ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা সমূহ, উন্নয়ন সংস্থা সমূহতে লাখ লাখ টাকা বেতনে গবেষক বা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত হতে পারে ।। হতে পারেন জ্যোতির্বিদ কিংবা মহাকাশ বিজ্ঞানী, চাকরী পেতে পারেন নাসাতেও !!
পেতে পারেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পরিবেশ পদক, যা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারে ।। আর বর্তমানে "Climate Change" এর উপরে সারা পৃথিবীতে চাকরীর বাজার খুব চড়া !
এতক্ষণ অনেক কিছু বলে ফেল্লাম, শুধু প্রতিষ্ঠিত হওয়া নয়, ভূগোলের জ্ঞান ছাড়া মানুষ পৃথিবী সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে ।। তাই সকলেরই ভূগোলের প্রাথমিক জ্ঞান থাকা খুবই জরুরী ।।
ভূগোলের জ্ঞান থাকলে মানুষ , পৃথিবীকে সঠিকভাবে জানবে, পরিবেশ সচেতন হবে ।। পরিবেশের ক্ষতি করবে না ।। দুর্যোগ সম্পর্কে জানবে ।।
ভূমিকম্প, বন্যা, বজ্রপাত ইত্যাদি কেন হয়, কখন হতে পারে, হলে কি করতে হবে এগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা জন্মাবে, যা প্রতিটি মানুষের জানা দরকার ।।
মানুষ জানবে পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে ।। পরিবেশের ক্ষতি করবে না ।। গাছ লাগাবে ।। জানবে জীব বৈচিত্র্য ।। মানুষ হবে পরিবেশের বন্ধু ।। আর পরিবেশও হবে মানুষ সহায়ক ।।
তাই সত্যি সত্যি মাতৃভাষার মতো করে প্রত্যেককে ভূগোলও শেখা উচিৎ ।। কারন পুরো পৃথিবী আমাদের মায়ের মতো ।। যা এই পৃথিবীর সকল জ্ঞানের মূল উৎস !
সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, মেঘমালা... সবই জানা দরকার ।। জানা দরকার দিন- রাত্রির কারন, সময়, গ্রহ, নক্ষত্র, পৃথিবীর উৎপত্তি সম্পর্কে ।। একটা মজার তথ্য দেইঃ এখন পৃথিবীতে ৭ টি মহাদেশ রয়েছে ।। একসময় ছিলো একটি ।। পৃথিবীর সূচনার কয়েক হাজার বছরের মধ্যেই দেখা যায়, পুরো পৃথিবীর মাঝ কেন্দ্রে ঐ একটি মহাদেশ ছিলো ।। আর মহাসাগর ছিলোও একটি ।। ঐ মহাদেশটির চারপাশ বেষ্টন করে ছিলো ঐ মহাসাগরটি ।। কালক্রমে ঐ একটি বৃহৎ মহাদেশ ভেঙ্গে এখনকার ৭ টি মহাদেশ সৃষ্টি হয়েছে, আর একটি আরেকটি থেকে ক্রমেই দূরে সরে গেছে ।। মহাসাগরটি আগের মতোই আছে, কিন্তু বিচ্ছিন্ন মহাদেশ গুলোর কারনে ঐ একটি মহাসাগর সুবিধার্থে ৫ টি গণ্য করা হয়, কিন্তু সব গুলোই একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত আছে ।। আর মহাদেশটি ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে ৭ টির আকারে পৃথিবীর সকল পাশে ছড়িয়ে যায় ।। এর ফলেই কিন্তু পৃথিবীর একেক প্রান্তে দিন হলে অন্য প্রান্তে রাত হয় ।। অথচ যখন ভূখণ্ড একটিই ছিলো তখন তার সকল দিকেই একি সংগে দিন আর একি সংগে রাত হতো, কালক্রমে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ভূখণ্ড বিচ্ছুরিত হওয়ায় আলাদা আলাদা সময়ে দিন-রাত্রি হয় ।। এই কথা গুলোই হয়তো অনেকের জানা ছিলো না ।। ভূগোল জানলে এসব রহস্য জানা যায় ।।

Post a Comment

Previous Post Next Post

ads

ads